ভারতীয় সভ্যতার প্রাচীনত্ব বিবর্তন সম্পর্কে আলোচনা করো ?Discuss the evolution of the antiquity of Indian civilization? প্রাক-ইতিহাস যুগের সভ্যতার নিদর্শন (Evidences of the Pre-historic civilisation), নবম শ্রেণী

১)ভারতীয় সভ্যতার প্রাচীনত্ব বিবর্তন সম্পর্কে আলোচনা

করো? Discuss the evolution of the antiquity of Indian civilization?


২) প্রাক-ইতিহাস যুগের সভ্যতার নিদর্শসম্পর্কে

আলোচনা করো ?


ভারতীয় সভ্যতার প্রাচীনত্ব (Antiquity of Indian Civilisation) :

বিবর্তনই বিশ্বসভ্যতার বৈশিষ্ট্য। ১৮০৯ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি বিজ্ঞানী লামার্ক এবং ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইন মানুষ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ ও ক্রমবিবর্তনের ব্যাখ্যা দেন। ডারউইন তাঁর ‘অরিজিন্‌ অব্‌ স্পিসিস্‌ বাই ন্যাচারাল সিলেক্‌শন’ ও ১৮৭১ খ্রিঃ ‘দ্য ডিসেন্ট অব ম্যান’ গ্রন্থে এ ব্যাপারে সুন্দর ব্যাখ্যা দিয়েছেন। ‘নৃতত্ত্ব’ (Anthropology),  জীবাশ্মতত্ত্ব (Polocontology) ও ‘জিনতত্ত্ব’ (Genetics)-এর দ্বারা বিবর্তনের তত্ত্বটি  বর্তমানে সুন্দরভাবে আলােচিত হয়েছে।




বিবর্তনের যুগে অগ্রগতির অসমতার প্রভাব সবসময়েই আছড়ে পড়েছিল ইতিহাসের পাতায়। তাই অস্ট্রেলিয়ার ‘আরুটা, নিউজিল্যান্ডের ‘মাউরি’, আফ্রিকার ‘বুশম্যান’, উত্তর আমেরিকার আর্কটিক অঞ্চলের এস্কিমােদের মতাে ভারতের জুয়াঙ্গা, টোডা ও নাগারা আজও প্রস্তরযুগে পড়ে আছে। মানব  সভ্যতার আদি পর্বের ইতিহাস বিশেষ জানা যায় না। ৪০০,০০০ খ্রিঃ পূঃ-২০০,০০০ খ্রিঃ পূঃ পুরাপ্রস্তর যুগ স্থায়ী হল। কোনাে কোনাে পণ্ডিতের মতে, ২,৬০,০০০-১০,২০০ খ্রিঃ পূঃ পর্যন্ত চার্লস ডারউইন পুরাপ্রস্তর যুগের স্থায়িত্বকাল হলেও প্রাগৈতিহাসিক যুগের আদি পর্বের ইতিহাস সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা খুবই কম। পণ্ডিতরা ওই সময়কার সােয়ান (পাঞ্জাব) নি ও মাদ্রাজের সংস্কৃতিকে ‘সােয়ান ও মাদ্রাসিয়ান সংস্কৃতি’ বলেছেন। পাঞ্জাবের সােয়ান ও উপত্যকায় প্রাপ্ত শিলাস্ফটিকগুলিকে সােয়ান সংস্কৃতির অঙ্গ বলা হয়। 



মন্তব্যঃ-

মােটামুটি ৫০,০০০ বা খ্রিঃ পূঃ ভারতে নেগ্রিটো জাতির লােকের বসবাস শুরু হয়। আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ভ এদের অস্তিত্ব আছে। মাদ্রাজের চিঙ্গালপেট, পাঞ্জাবের শতদ্রু উপত্যকা, বিহারের মুঙ্গের, সহ পূর্বঘাট পর্বতমালার উপকূল ধরে পুরাতন প্রস্তর যুগের বহু নিদর্শন মিলেছে। মধ্যপ্রদেশের হােসাঙ্গাবাদের ৪০ কিমি উত্তর-পূর্বে নর্মদার তীরে হাতনােরা গ্রামে মানব সভ্যতার প্রাচীনতম র নিদর্শন সম্প্রতি পাওয়া গেছে। প্রায় ২০ লক্ষ বছর আগে ‘প্লাইসটোসিন যুগের এই নিদর্শন। বলে দিলীপকুমার চক্রবর্তী তাঁর ভারতবর্ষের প্রাগ-ইতিহাস’ গ্রন্থে মন্তব্য করেছেন। পুরাপ্রস্তর যুগ থেকে মধ্যপ্রস্তর যুগে (১০,০০০-৫,০০০ খ্রিঃ পূঃ) উত্তরণের মাঝে এক দীর্ঘ বিবর্তনের মাধ্যমে মানুষ আর এক ধাপ অগ্রসর হয়।ভারতবর্ষে নব্যপ্রস্তর যুগের থিতিকাল ৫,০০০ খ্রিঃ পূঃ থেকে ৪,০০০ খ্রিঃ পূঃ পর্যন্ত। (এইসময়কে “নব্যপ্রস্তর যুগের বিপ্লব” (Neolithic revolution) বলা হয় ।



প্রাক-ইতিহাস যুগের সভ্যতার নিদর্শন (Evidences of the Pre-historic civilisation)



ভূমিকাঃ-

এইসময় থেকে মানুষ পশুপালন, খাদ্য উৎপাদন, গুহায় বাসগৃহ নির্মাণ, বয়নশিল্পে উন্নতি, মৃৎশিল্পে উন্নতি, যােগাযােগ ব্যবস্থায় উন্নতিসাধন করেছিল। তাদের শিল্পচেতনার প্রমাণ মেলে মধ্যপ্রদেশের ভীমভেটকার গুহাচিত্র থেকে। ৩,২৫০ খ্রিঃ পূঃ থেকে ২,৭৫০ খ্রিঃ পূঃ পর্যন্ত সময়কালকে বলে ‘তাম্রপ্রস্তর যুগ’ (Chalcolithic Age)। তামার সঙ্গে টিন মিশিয়ে ব্রোঞ্জ ধাতু তৈরির কৌশল মানুষ আয়ত্ত করেছিল। বিবর্তনের ইতিহাসে এই তাম্রপ্রস্তর যুগে সিন্ধুসভ্যতার বিকাশ ঘটে। 


    এই যুগে প্রস্তরের ব্যবহার থাকলেও এই প্রথম মানুষ ধাতুর ব্যবহার শুরু করেছিল। কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য, কারিগরিশিল্প প্রভৃতি উন্নতিলাভ করেছিল, এই সিন্ধুসভ্যতাকে কেন্দ্র করে। সিন্ধু ও পাঞ্জাব থেকে ক্যানিংহাম প্রাগৈতিহাসিক যুগের বহু তথ্য খুঁজে পান ১৮৫৬ খ্রিঃ। পণ্ডিত লায়েলের লেখা ‘জিয়ােলজিক্যাল এভিডেন্স অব দি অ্যান্টিকুইটি অব ম্যান’ (১৮৬৩) গ্রন্থে প্রাচীন তথ্য নিয়ে বিস্তৃত আলােচনা রয়েছে। 


মন্তব্যঃ-

আবার সিন্ধুসভ্যতা মেহেরগড় সভ্যতাকে কেন্দ্র করে বড়াে হয়। লৌহ আবিষ্কার হয়েছিল খ্রিঃ পূঃ ১৫০০ থেকে খ্রিঃ পূঃ ১১০০ অব্দের মধ্যে। ভারতে তাম্ৰব্রোঞ্জ যুগের শেষের দিকে আনুমানিক ১০০০ খ্রিঃ পূঃ লৌহযুগের সূচনা হয়। আর্যদের আগমনের সাথে লােহার ব্যবহার এদেশে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। 





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ