মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বাবরের কৃতিত্ব বর্ণনা করো। নবম শ্রেণী
মােগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা :-
বাবর:-
মােগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন জাহিরুদ্দিন মহম্মদ বাবর তিনি দিল্লির শেষ সুলতান। ইব্রাহিম লােদিকে পরাস্ত করে মােগল শাসনের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন।
সামারিক অভিযানঃ-
১৪৮৩ খ্রিঃ ২৪ ফেব্রুয়ারি মধ্য এশিয়ার ফরঘনা রাজ্যে জাহিরুদ্দিন মহম্মদ বাবরের জন্ম হয়। পিতা ওমুর শেখ মির্জার মৃত্যুর পর মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি ফরঘনার অধিপতি হন। এখানে কাবুল, কান্দাহার জয় করে ১৫০৭ খ্রিঃ 'পাদশাহ’ উপাধি নিয়ে শক্তিশালী হয়ে ওঠেন।
ভারত আক্রমণঃ-
ভারতের রাজনৈতিক অস্থিরতা, লােদি সুলতানদের দুর্বলতা, ভারতের প্রভূত ধনসম্পদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে এবং সর্বোপরি তৈমুরের আক্রমণের সাফল্য বাবরকে ভারতবর্ষ। আক্রমণে উৎসাহিত করেছিল। প্রথমে ১৫১৯-১৫২৪ খ্রিঃ পর্যন্ত মােট ৪টি অভিযান পাঠিয়ে ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের বাজাউর, ভেরা ও পাঞ্জাবের শিয়ালকোট পর্যন্ত জয় করে ভারতে ঢােকার পথ পরিষ্কার করে নেন। ১৫২৪ খ্রিঃ বাবরলাহাের ও দীপালপুর জয় করলে ইব্রাহিম লােদির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দৌলত খাঁ লােদি ও আক্রাম খাঁ লােদি বাবরকে দিল্লি আক্রমণের জন্য অনুরােধ করেন। এরপর ১৫২৫ খ্রিঃ বাবর হিন্দুস্থান জয়ের প্রস্তুতি নেন।
প্রথম পানিপথের যুদ্ধ দিল্লি ও আগ্রা দখলঃ-
১৫২৬ খ্রিঃ বাবর ১২,০০০ সৈন্য, কিছু বন্দুক ও কামানসহ দিল্লি আক্রমণ করলে সুলতান ইব্রাহিম লােদি ১,২০,০০০ সৈন্য নিয়ে তাকে বাধা দেন। ফলে উভয় পক্ষের মধ্যে পানিপথের প্রান্তরে তুমুল যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধ প্রথম পানিপথের যুদ্ধ (১৫২৬ খ্রিঃ) নামে পরিচিত) এই যুদ্ধের ফলে --
(১) দিল্লির সুলতান ইব্রাহিম লােদি পানিপথের যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত হন।
(২) বাবর অতি সহজেই দিল্লি ও আগ্রা অধিকার করেন। তবে রাজপুত ও আফগান শক্তির অস্তিত্ব তখনও অটুট ছিল।
(৩) ঐতিহাসিক রাশব্রক প্রথম পানিপথের বুথ, উইলিয়াম মনে করেন, “পানিপথের জয়দ্বারা যখন সাম্রাজ্য স্থাপনের প্রথম পদক্ষেপ ঘটে; তখন আফগান শক্তি বড়াে বাধা হয়েছিল।”*
(৪) দিল্লি ও আগ্রার লুণ্ঠিত ধনরত্ন তিনি সেনাবাহিনী, ধর্মগুরু ও আত্মীয়দের মধ্যে বিতরণ করার ফলে কালান্দার’ উপাধি লাভ করেন।
খানুয়ার যুদ্ধ:রাজপুত শক্তির বিরুদ্ধেঃ-
প্রায় ১৮টি যুদ্ধবিজেতা রানা সঙ্গ বা সংগ্রাম সিংহ সুলতানি সাম্রাজ্যের ধ্বংসস্তুপের উপর মােগল সাম্রাজ্য স্থাপনের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করতে বাবরের বিরুদ্ধে এক বিশাল শক্তিজোট গড়ে তােলেন। এই যুদ্ধের গুরুত্ব হল আজমির, গােয়ালিয়র, মাড়ােয়ার, অম্বর, চান্দেরী প্রভূতি রাজ্যের রাজপুত রাজারা এবং ইব্রাহিম লােদির ভাই মামুদ লােদি রানা সংগ্রাম সিংহের সঙ্গে মিলিত হন। ১৫২৭ খ্রিঃ ১৭ মার্চ বাবরের সঙ্গে রানা সংগ্রাম সিংহের মিলিত বাহিনীর টানা ১০ ঘণ্টা যুদ্ধ হয় খানুয়ার প্রান্তরে। এটি ‘খানুয়ার Fanipath set his foot on the path of empire- building, and in this path the first great obstacle was the opposition of the Afghan tribes."যুদ্ধ’’ নামে পরিচিত) এই যুদ্ধে রানা সংগ্রাম সিংহ পরাজিত ও গুরুতর আহত হন। এর কিছুদিনের মধ্যে রানা সঙ্গের সহকারীরা তাকে বিষ প্রয়ােগ করে হত্যা করেন।
চান্দেরী জয় (১৫২৮ খ্রিঃ) :-
বাবর মেদিনী রায়কে পরাজিত করে চান্দেরী দুর্গ দখল করেন। ১৫২৮ খ্রিঃ চান্দেরী জয় করে প্রাক্তন শাসক আহমদ শাহকে চান্দেরীর শাসনভার তুলে দেন।
0 মন্তব্যসমূহ