Components of Nervous System

                                                            

Components of Nervous System

স্নায়ুতন্ত্রের উপাদান (Components of Nervous System)


নায়ুতন্ত্র প্রধানত দু-রকম কোশ উপাদান নিয়ে গঠিত, যথা—1. স্নায়ুকোশ বা নিউরেনি। (neurone) এবং 2. ধারক কোশ বা নিউরােগ্লিয়া (neuroglea)।


(1) স্নায়ুকোশ বা নিউরােন (Neurone) 


এরা স্নায়ুতন্ত্রের গঠনমূলক ও কার্যমূলক উপাদান। প্রতিটি স্নায়ুকোশ একটি কোশদেহ (cell body) এবং কতকগুলি  প্রবর্ধক (process)  নিয়ে গঠিত । প্রবর্ধক দু-রকমের হয়, যথা—দীর্ঘ প্রবর্ধক বা অ্যাক্সন (axon) এবং ক্ষুদ্র ও শাখান্বিত প্রবর্ধক বা ডেনড্রন (dendron)। 


কাজ (Function):-  স্নায়ু-স্পন্দন পরিবহণ করা স্নায়ুকোশের প্রধান কাজ।


(2) নিউরােগ্লিয়া (Neuroglea) : 


নিউরােন ছাড়া স্নায়ুতন্ত্রের অপর একটি উপাদান হল নিউরােগ্লিয়া। এটি একপ্রকারের পরিবর্তিত যােগকলা। স্নায়তন্ত্রের কোশ সমষ্টির 90 শতাংশই নিউরােগ্লিয়া। এরা স্নায়ু-স্পন্দন পরিবহণ করতে পারে না। আকৃতি অনুসারে নিউরােগ্লিয়া তিন রকমের হয়, যথা—


(i) তারকাকার অ্যাস্ট্রোসাইট (astrocyte), 

(ii) স্বল্প প্রবর্ধক যুক্ত অলিগােডেন্ড্রোগ্লিয়া (oligodendroglea) এবং 

(iii) ক্ষুদ্রাকার মাইক্রোগ্লিয়া (microglea)।


কাজ (Functions):-


(i) ধারক কোশ হিসেবে কাজ করে, 

(ii) আগ্রাসী কোশ হিসেবে। কাজ করে, 

(iii) রক্তবাহকে বেষ্টন করে নিউরােনে আয়ন পরিবহণ করে। 

(iv) মায়েলিন সিদ। গঠনে অংশগ্রহণ করে। 


নিউরােনের বিবরণ (Description of Neurone)


সংজ্ঞা (Definition):- 


কোশদেহ ও সকল প্রকার প্রবর্ধক নিয়ে গঠিত স্নায়ুতন্ত্রের। গঠনগত ও কার্যগত একক যা স্নায়ুস্পন্দন পরিবহণ করে তাকে নিউরােন বলে।


গঠন (Structure):-


নিউরােন প্রধানত দুটি অংশ নিয়ে গঠিত, যথা—

1. কোশদেহ বা  সেল বডি (cell body) এবং

2. প্রবর্ধক বা প্রসেস (process)। 


(1) কোশদেহ (Cell body) :


নিউরােনের নিউরােপ্লাজম কোশদেহ কোশ দেহকে নিউরােসাইটন (neurocyton) বলে । এটি গােলাকার, ডিম্বাকার, শাঙ্কবাকার এবং নক্ষত্রাকার হতে পারে।


কোশদেহের অংশগুলি হল— 


(i) কোষঝিল্লিঃ- কোশদেহকে আবৃত করে লাইপােপ্রােটিন নির্মিত ঝিল্লি বিশেষ।


(ii) নিউরােপ্লাজমঃ- কোশদেহে অবস্থিত সাইটোপ্লাজম, যার মধ্যে নিউক্লিয়াস, কোর্শ অঙ্গাণু, নিউরােফাইব্রিল, নিজল দানা অবস্থান করে।


(III) নিউক্লিয়াসঃ-  কোশদেহের কেন্দ্রে অবস্থিত গােলাকার বা ডিম্বাকার অঙ্গাণু। 


(IV)) কোন অঙ্গাণুঃ-  কোশদেহের সাইটোপ্লাজমে মাইটোকন্ডিয়া, গলগি বস্তু, সেন্ট্রোজোম ইত্যাদি কোশ অঙ্গাণ থাকে। উল্লেখ্য, স্নায়ুকোশের সেন্ট্রোজোম অনুন্নত ও নিষ্ক্রিয় হওয়ায় স্নায়ুকোশ বিভাজনে অক্ষম। 


(V) নিজল্‌ দানাঃ- এগুলি একপ্রকারের রাইবাে- নিউক্লিওপ্রােটিন দ্বারা গঠিত কণিকাবিশেষ, যা কোশদেহ

এবং ডেনড্রনে অবস্থান করে এবং প্রােটিন সংশ্লেষে সহায়তা করে।


(VI) নিউরােফাইব্রিলঃ- এগুলি একপ্রকারের সূত্রাকার গঠন বিশেষ, যারা কোশদেহ, অ্যাক্সন ও ডেনড্রনে বিন্যস্ত থাকে। এরা স্নায়ুকোশের সংকোচনে সহায়তা করে।


2) প্রবর্ধক (Process): স্নায়ুকোশের কোশদেহ থেকে নির্গত সূক্ষ্ম সূত্রাকার অংশগুলিকে প্রবর্ধক বা প্রসেস বলে। প্রবর্ধক দু-রকমের হয়, যথা—ক্ষুদ্র প্রবর্ধক বা ডেনড্রনে (dendron)  এবং দীর্ঘ প্রবর্ধক বা অ্যাক্সন (axon)। 


(a) ডেনড্রন (Dendron) :


সংজ্ঞা:- কোশদেহ থেকে নির্গত ক্ষুদ্র শাখা-প্রশাখাযুক্ত যে প্রবর্ধকগুলি স্নায়ুস্পন্দন পূর্ববর্তী নিউরােন বা রিসেপটর থেকে গ্রহণ করে কোশদেহে প্রেরণ করে তাদের ডেনড্রন বলে।


বৈশিষ্ট্য:- 

(i) ডেনড্রন হল কোশদেহ থেকে উদগত ক্ষুদ্র সংজ্ঞাবহ প্রবর্ধক। 

(ii) ডেনড্রন আকারে ছােটো এবং অসংখ্য শাখাপ্রশাখাযুক্ত। ডেনড্রনের এক-একটি শাখাকে ডেনড্রাইট (dendrite) বলে ।

(iii) ডেনড্রনে নিউরােপ্লাজম, নিউরােফাইব্রিল ও নিজল দানা থাকে। 

(iv) এগুলির মাধ্যমে আবেগ পূর্ববর্তী নিউরােন বা গ্রাহক থেকে কোশদেহে প্রবেশ করে। 


(b) অ্যাক্সন (Axon) : 


সংজ্ঞাঃ- নিউরােনের যে দীর্ঘ ও চেষ্টীয় প্রবর্ধক স্নায়ুস্পন্দনকে কোশদেহ থেকে পরবর্তী নিউরােনে বা কারকে বহন করে তাকে অ্যাক্সন বলে।


বৈশিষ্ট্যঃ- 

(i) এটি নিউরােনের দীর্ঘ চেষ্টীয় প্রবর্ধক। 

(ii) এটি শাখাহীন বা স্বল্প শাখাযুক্ত ; অ্যাক্সন শাখাকে অক্ষশাখা বা কোল্যাটারাল (collateral) বলে। 

(ii) কোশদেহের যে অংশ থেকে অ্যাক্সনের উৎপত্তি হয় তাকে অক্সন হিলক (axonhillock) বলে। 


(iv) অ্যাক্সনের সাইটোপ্লাজমকে অ্যাক্সোপ্লাজম (axoplasm) বলে। অ্যাক্সোপ্লাজমে মাইটোকন্ড্রিয়া ও নিউরােফাইব্রিল থাকে, কিন্তু নিজল দানা থাকে না। 


(v) অ্যাক্সনের ওপরে তিনটি আবরণী থাকে, এগুলি হল যথাক্রমে ভিতর থেকে বাইরের দিকে অ্যাক্সোলেমা (axolemma), মেড়লারি আবরণ (medullery sheath) বা মায়ােলিন সিদ্‌ (myelin sheath) এবং নিউরিলেমা (neurilemma)। 


(vi) মেডুলারি আবরণ ও নিউরিলেমার অন্তবর্তী স্থানে সােয়ান কোশ (schwanncell) থাকে। 


(vii) অ্যাক্সনের মেলার আবরণ স্থানে স্থানে বিচ্ছিন্ন। ওই অঞ্চলে নিউরিলেমা সংকুচিত হয়ে র‍্যানভিয়ারের পর্ব (nodes of Ranvier) গঠন করেছে। 


(viii) অ্যাক্সনের শেষপ্রান্ত অসংখ্য সুক্ষ্ম শাখান্বিত হয়ে প্রান্তবরশ হ(endbrush) গঠন করে। 


(ix) অ্যাক্সন কোশদেহ থেকে আবেগ দূরে নিয়ে যায়, অর্থাৎ পরবর্তী নিউরােনে বা ইফেকটরে বহন করে।





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ