প্রশ্ন ঃ টীকা লেখ পাটলিপুত্র।
উত্তর ঃ বিম্বিসারের পুত্রের আজাদ শত্রু শত্রুর আক্রমণ প্রতিশোধ করিবার জন্য গঙ্গা ও শোন নদীর সঙ্গমস্থলে অবস্থিত পাটগ্রামে একটি দুর্গ নির্মাণ করেন।
কালক্রমে পাটুলি গ্রাম মগধের রাজধানী পাটলিপুত্রে পরিণত হয়।
মৌর্য বংশের প্রতিষ্ঠাতা চন্দ্রগুপ্ত এর শাসনকালে পাটলিপুত্রের খ্যাতি বহুদূর প্রসারিত হয়। গ্রিক রাজদূত মেগাস্থিনিস পাটলিপুত্র নগর এর শাসন ব্যবস্থার প্রশংসা করিয়াছেন। কয়েক শতাব্দী ওড়িয়া পাটুলি পুত্র ছিল পূর্ব ভারতের শক্তি কেন্দ্র।
প্রশ্ন ঃ টীকা লেখ নন্দ বংশ।
উত্তর ঃ নন্দ বংশের প্রতিষ্ঠাতা নাম মহাপদ্ম নন্দ। মোট 9 জন রাজা মগধে রাজত্ব করেন। তাহারা নব নন্দ নামে পরিচিত। নন্দ বংশের শেষ রাজা ছিলেন ধননন্দ। গ্রিক লেখক গন ধন নন্দকে জাণ্ডামেস নামে উল্লেখ করিয়াছেন।
চন্দ্রগুপ্ত নন্দ বংশ ধ্বংস করিয়া মগধের সিংহাসনে আরোহন করেন।
প্রশ্ন ঃ টীকা লেখ অর্থশাস্ত্র।
উত্তর ঃ মৌর্য সম্রাট চন্দ্রগুপ্তের মন্ত্রীর কৌটিল্য অর্থশাস্ত্র রচনা করেন। অর্থশাস্ত্র চন্দ্রগুপ্তের শাসনকাল এবং প্রাচীন ভারতের ইতিহাস রচনায় একটি অমূল্য সূত্র।
অর্থশাস্ত্রে রাজার কর্তব্য শাসনব্যবস্থা রাষ্ট্রবিজ্ঞান কৃষি শিল্প ও পশুপালন সমাজব্যবস্থা প্রীতি দাশ দুর্ভিক্ষ ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ আছে। অর্থশাস্ত্র অনুসারে খনি খনন ধন সম্পদ রক্ষা ও বৃদ্ধি কোন উপাদান সেতু ও জলাশয় স্থাপন ইত্যাদি জনকল্যাণমূলক কাজ রাজার কর্তব্য।
অর্থশাস্ত্র হইতে জানা যায় যে সমা হতৃ সন্নিন ধাত্রি প্রভৃতি উচ্চ পদস্থ রাজ কর্মচারীগণ কর আদায় করিবেন। শাসন বিভাগের বিভিন্ন প্রধান বা অধ্যক্ষগণ চিকিৎসক দুর্ভোগে পড়েছেন কিন্তু তাদের জমি বিক্রয় ও বন্ধকের অধিকার ছিল না। রাজা সর্বেসর্বা ছিলেন। তার শাসনকার্যে রাজাকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য মন্ত্রী পরিষদ ছিল। গ্রামের গ্রামের শাসন পরিচালনা করিতেন। সৈন বিভাগের প্রধানের উপাধি ছিল বলাধ্যক্ষ। নগরাধ্যক্ষ ছিলেন নগরের প্রধান কর্মকর্তা।
কৌটিল্যের সময় ভারতের বস্ত্র শিল্প খুবই উন্নত ছিল। বস্ত্র ও অন্যান্য শিল্পে নিযুক্ত শ্রমিকদের নিজস্ব শ্রেণী বা প্রতিষ্ঠিত ছিল। বৈশ্য ও শূদ্র গান বাণিজ্য কৃষি কর্ম ও পশুপালন এ নিযুক্ত থাকত।
প্রশ্ন ঃ ইন্ডিকা সম্বন্ধে আলোচনা করো।
উত্তর ঃ মৌর্য সম্রাট চন্দ্রগুপ্তের রাজসভায় গ্রিট রাষ্ট্রদূত মেগাস্থিনিস ইন্ডিকা গ্রন্থ প্রণয়ন করেন। গ্রন্থটিতে মেগাস্থিনিস মগধের রাজধানী পাটলিপুত্র এবং ভারতীয় সমাজ সম্পর্কে তাহার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করিয়াছেন। ইন্ডিকা গ্রন্থটি সম্পূর্ণ আকারে পাওয়া যায় নাই। কিন্তু আরিয়ান স্ট্রাবো 10 প্রমুখ লেখকগণ তাদের লেখায় মেগাস্থিনিস এর বিবরণ হইতে প্রচুর পদ্ধতি দিয়াছেন। এই সকল লেখকদের উদ্ধৃতি হইতে ভারত সম্পর্কে মেগাস্থিনিস এর অভিজ্ঞতা জানা যায়।
প্রশ্ন ঃ সাতবাহন বংশের গুরুত্ব কি?
উত্তর ঃ কৃষ্ণ এবং গোদাবরী নদীর মধ্যবর্তী তেলেগু হাসি অঞ্চলের সাতবাহন বংশের রাজ্য অবস্থিত ছিল। অশোকের মৃত্যুর পর মৌর্য শাসন থেকে সাতবাহন গহন স্বাধীন হয়। সাতবাহন বংশের রাজা গৌতম পুত্র সাতকর্ণী বৈদেশিক আক্রমণ কারী যবন ও পার্থিয়ান পরাজিত করেন।
ভারতের ইতিহাসে সাতবাহন বংশের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। মৌর্য বংশের পতনের পর সাতবাহন বংশ উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করেন।
প্রশ্ন ঃ অশোকের পর ভারতের রাষ্ট্রীয় অবস্থা কি হয়?
উত্তর ঃ আস্শকের পর ভারতে কেন্দ্রীয় রাজলক্ষ্মীর অবসান হয়। চারিদিকে ছোট ছোট রাজ্য গড়িয়া ওঠে। ভারতের রাষ্ট্র ব্যবস্থার এই দুর্বলতার সুযোগ গ্রহণ করিয়া বাহি লোক প্রাচীন গ্রিক পার্থিয়ান সব কুশল প্রভৃতি বৈদেশিক জাতি ভারত আক্রমণ করে।
প্রশ্ন ঃ টীকা লেখ মহাযান বৌদ্ধধর্ম।
উত্তর ঃ আনুমানিক 100 খ্রিস্টাব্দে কুষাণ রাজ কনিষ্ক কাশ্মীরের চতুর্থ বৌদ্ধ সংগীতি আহবান করেন। এই সম্মেলনে ভৌত ধর্ম নতুন রূপ ধারণ করে। নতুন মতে বুদ্ধপূজা বুদ্ধ ও অন্যান্য বৌদ্ধ দেবতা ভ্যান ও মূর্তি নির্মাণ বৌদ্ধ ধর্মের স্থান লাভ করে। নতুন মদ মহাযান নামে পরিচিত হয়। পুরাতন মোট তিনজন বলা হয়। ইন্ডিয়ানি বৌদ্ধগণ বুদ্ধের বাণী ও উপদেশ আশ্রয় করিয়া থাকেন কনিষ্কের সময় মহাযান বৌদ্ধমত চীনও মধ্য এশিয়ার প্রবেশ করে।
প্রশ্ন ঃ সভ্যতার মূল মতৈক্য বলিতে কি বুঝ?
উত্তর ঃ ভারত বিশাল দেশ। কাশ্মীর হইতে কন্যাকুমারী এবং গুজরাট হইতে অরুণাচল পর্যন্ত বিস্তৃত এই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ভাষা সংস্কৃতি পোশাক-পরিচ্ছদ জলবায়ু খাওয়া-দাওয়া ইত্যাদি আলাদা। সুপ্রতিম কাল হইতে বিভিন্ন গোষ্ঠীর ভারতের বসতি স্থাপন করিয়াছে। হিন্দু ইসলাম শীত জৈন বৌদ্ধ খৃষ্টান প্রভৃতি বিভিন্ন ধর্মের লোক ভারতে অধিবাসী। বিভিন্নতা ও বৈচিত্র্য শর্তেও যুগ যুগ ধরে একই সঙ্গে বসবাস করা ও একই রাষ্ট্রীয় শাসন পরিচালিত হওয়ার ফলে ভারতবাসীদের মধ্যে একটি ঐক্যবদ্ধ গড়িয়া উঠিয়াছে। পারস্পারিক আদান-প্রদানের মধ্য দিয়ে এই ঐক্য চেতনার আরো সুদৃঢ় ও হইয়া আছে। এক গোষ্ঠী ওপর গোষ্ঠীর সংস্কৃতি গ্রহণ করিয়াছেন একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা সম্পন্ন ও সহানুভূতিশীল রই আছে। এই একত্ববাদী ভারতীয় সভ্যতার মূল গত ঐক্য।
প্রশ্ন ঃ টীকা লেখ ফাহিয়েন ।
উত্তর ঃ ফাহিয়েন ভারতে আগত প্রথম চৈনিক পরিব্রাজক। সত্য ধর্ম যা বৌদ্ধধর্ম অনুশীলনের জন্য কেউ কেউ তার চেয়েও প্রমুখ সংগীতের সঙ্গে দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের রাজত্বকালে ভারত আক্রমণ করেন। ফাহিয়েন ১৫ বছর ভারতে ছিলেন ৩৯৯ - ৪১৪ খ্রিস্টাব্দে।
ফাহিয়েন ভারত ভ্রমণ এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বন্ধু স্বাস্থ্য অধ্যায়ন ও সংগ্রহ কিন্তু তাঁর বিবরণে ভারতবাসীর সামাজিক ও সংস্কৃতি জীবন ও সুন্দর ভাবে চিত্রিত হয়েছে। ফাহিয়েন মৌর্য সম্রাট অশোকের প্রাসাদ দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন। তিনি তাঁহার বিবরণে গাঙ্গেয় উপত্যকার অধিবাসীদের আতিথেয়তার ও নীতিপরায়নতার উল্লেখ করেছেন ।
0 মন্তব্যসমূহ