ইলতুৎমিস কিভাবে মোঙ্গল আক্রমণ হইতে ভারত সীমান্ত রক্ষা করেন? হোসেন শাহ । জয়নাল আবেদীন।

ইলতুৎমিস কিভাবে মোঙ্গল আক্রমণ হইতে ভারত সীমান্ত রক্ষা করেন? হোসেন শাহ । জয়নাল আবেদীন।


প্রশ্ন ঃ ইলতুৎমিস কিভাবে মোঙ্গল আক্রমণ হইতে ভারত সীমান্ত রক্ষা করেন?


উত্তর ঃ সুলতান ইলতুৎমিসের শাসনকালে মঙ্গল গান চেঙ্গিস খানের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম ভারত সীমান্তে উপস্থিত হয়। হারামের বা শেখ শাহ জালাল উদ্দিন মঙ্গবণীর  চীন ভারত সীমান্ত অঞ্চলে উপস্থিত হইয়া ছিল। কারণ বঙ্গভূমি সিংহের আক্রমণ হইতে আত্মরক্ষার জন্য পাঞ্জাবের ইলতুৎমিশের আশ্রয় প্রার্থনা করেছিলেন। কিন্তু ইলতুৎমিস সমগ্র পরিস্থিতি বিবেচনা করিয়া মঙ্গবণিকে আশ্রয়দান করিতে অস্বীকার করেন। বঙ্গবন্ধু এবং গুজরাত লুন্ঠন করিয়া পাড়স্থ চলিয়া যান। মঙ্গলগঞ্জ ও ভারত সীমান্ত ত্যাগ করে। এইভাবে ইলতুৎমিস সম্ভবপর মোঙ্গল আক্রমণ হইতে ভারত সীমান্ত রক্ষা করিয়া ছিলেন।


প্রশ্ন ঃ ইলতুৎমিস কেন রিজিয়ারকে সিংহাসনের জন্য মনোনীত করেন?


উত্তর ঃ ইলতুৎমিসের জীবিতকালীন তাহা দুষ্টু পুত্র বঙ্গদেশের শাসনকর্তা নাসির উদ্দিন মাহমুদের মৃত্যু হয় 1229 খ্রিস্টাব্দে। ইলতুৎমিশের অন্যান্য উচ্চবর্ণ ছিলেন অপদার্থ ও রাজ্য শাসনের জন্য  অনুপযোগী । এই কারণে ইলতুৎমিস মৃত্যুশয্যায় তাহার প্রখর বুদ্ধি সালেহী কন্যাকে দিল্লীর সিংহাসন এর জন্য মনোনীত করেন।


প্রশ্ন ঃ রিজিয়ার ব্যর্থতার কারণ কি?


উত্তর ঃ তুর্কি অমিত কুমার আহ্বান সিংহাসনের মুসলিম মহিলার মনোনয়ন প্রসঙ্গে চিত্রে গ্রহণ করেন নাই। তদুপরি রিজিয়া আবিসিনীয় ক্রীতদাস জালালউদ্দিন ইয়াকুবের উচ্চপদে অধিষ্ঠিত করিয়াছিলেন। ইহাও তুর্কি অমিত ওমরা হজের বিরক্তি উৎপাদন করিয়াছিল। তাহারা শহীদদের সর্তকতা অলতুলনীয়ার আর নেতৃত্বে রিজিয়ার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেন। রেজিয়া চক্রান্তকারীদের দমন করিবার জন্য তাদের বিরুদ্ধে অভিযান করেন। কিন্তু এই অভিযান ব্যর্থ হয়। রিজিয়া চক্রান্তকারীদের হস্তে বন্দিনী হয়। উপায়ান্তর না দেখিয়া রিজিয়া চক্রান্তকারীদের নেতা আলতুনিয়া কে বিবাহ করেন। কিন্তু দিন দিন প্রবর্তনের পথে চক্রান্তকারীরা রিজিয়া প্রত্যাহার শামীম আলতুনিয়া কে হত্যা করা হয়। রিজিয়া মাত্র তিন বছরের কিছু বেশি কার রাজত্ব করইতে পারিয়াছিলেন।


প্রশ্ন ঃ টীকা লেখ মুসলমান।


উত্তর ঃ সুলতান জালালুদ্দিন শাসনকালে মঙ্গলগঞ্জ ভারত আক্রমণ করেন 1292 খ্রিস্টাব্দে । জালাল উদ্দিন এই আক্রমণ প্রতিহত করেন এবং আক্রমণকারী মোঙ্গলদের ভারত হয়েছে প্রত্যাবর্তনের অনুমতি দেন। কিন্তু উকুমকুম নামক চেঙ্গিস খানের জৈনের বংশধর নেতৃত্বে দেশ কিছু সংখ্যক মঙ্গল দিল্লির নিকটে বসতি স্থাপন করে এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। এই ধর্ম মন্ত্রীর মঙ্গলগন নয়া মুসলমান নামে পরিচিত হয়। পরবর্তীকালে নয়া মুসলমানগন দিল্লির রাজনীতিতে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করিয়া ছিল।


প্রশ্ন ঃ আলাউদ্দিন খলজী কিভাবে বাজারদর নিয়ন্ত্রণ করিয়াছিলেন?


উত্তর ঃ বাজারদর নিয়ন্ত্রণ করিবার জন্য সুলতান আলাউদ্দিন খলজির দুইটি রাজপথ সৃষ্টি করেন (ক) দেওয়ান-ই-রিয়াশত এবং (খ) সহন -ই-মণ্ভি। গুপ্তচর সুলতানকে নিয়মিতভাবে বাজারদর জানাই তো। কোন ব্যক্তির খাদ্যশস্য মজুদ করার অধিকার ছিলনা। ব্যবসায়ীদের সব পণ্য পণ্য খোলাবাজারে দেখাইতে হইত। কেহ কোন পণ্য ওজনে কম দিলে তাহার দের হইতে সমপরিমাণ মাংস কাটিয়া লোহা হইত । ঐতিহাসিক বাণীর মতানুসারে সুলতান আলাউদ্দিন এর কঠোর ব্যবস্থার ফলে বাজারদর আশ্চর্যজনকভাবে কম ছিল। 


প্রশ্ন ঃ টীকা লেখ (ক) হোসেন শাহ (খ) জয়নাল আবেদীন।


উত্তর ঃ (ক) হোসেন শাহঃ-


1893 খ্রিস্টাব্দে হোসেন শাহ বাংলার সিংহাসনে আরোহণ হন। তিনি বাংলার স্বাধীন সুলতান  ছিলেন। হোসেন শাহ বাংলার সীমান্ত সুরক্ষিত করেন এবং উড়িষ্যা পর্যন্ত বাংলার সীমান্ত প্রসারিত করেন। দিল্লির সুলতান সিকান্দার নদী ঋত্বিক জৈনপুরের শাসনকর্তা বিতাড়িত হইলে হোসেন তাকে আশ্রয় দান করিয়া ছিলেন। হোসেন শাহ জৈনপুরের শাসন হইতে উদ্ধার করেন। তিনি আসামের আহোম রাজ্য আক্রমণ কোরিয়া কামতাপুর দখল করেন।


হুসেন শাহের রাজত্বকালে বাংলা সাহিত্যের প্রভূত উন্নতি হয়। তাহার পৃষ্ঠপোষকতায় মালাধর বসু ভগবত এর বঙ্গানুবাদ করেন। মালাধর বসু সুলতান হোসেন এর নিকট হইতে গুনরাজ খান উপাধি লাভ করেন। হুসেন শাহের সেনাপতি পরাগল খাঁ এর পৃষ্ঠপোষকতায় মহাভারত বঙ্গ ভাষায় অনুবাদ করা হয়। হোসেন সহ বহু মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। তাহা রাজত্বকালে বহু মুদ্রা পাওয়া গিয়েছে। 1518 খ্রিস্টাব্দে হোসেন শাহের মৃত্যু হয়।


(খ) জয়নাল আবেদীন।


  কাশ্মীরের শাসক জয়নাল আবেদীন হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে প্রজাপতির প্রতি সমুদ্র স্মৃতি শিল্প-সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতা ও সুশাসনের জন্য কাশ্মীরের আকবর রূপে পরিচিত হয়েছিলেন। জয়নাল আবেদীন প্রজাদের উপর ভার লাঘব করেন দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা করেন এবং রাজ্য মধ্য চুরি-ডাকাতি বন্ধ করেন। তিনি হিন্দু প্রজাদের উপর হইতে জিজিয়া কর ও তুলিয়া নন এবং যেসব ব্রাহ্মণ পণ্ডিত তাহার পিতার রাজত্বকালে কাশ্মীর ত্যাগ করিতে বাধ্য করিয়াছিল তাহাদের ফিরাইয়া আনেন।


জয়নাল আবেদীন হিন্দি আশিক এবং তিব্বতীয় ভাষাতে সুপন্ডিত ছিলেন। তাহার পৃষ্ঠপোষকতায় মহাভারত এবং রাজত্ব রঙ্গিনী সংস্কৃত ভাষা হইতে পারোসিক ভাষায় অনূদিত হয়। কয়েকটি আরবিক এবং কারো শেখ পুস্তক ও জয়নাল আবেদীন এর অনুকূলে হিন্দি ভাষায় অনূদিত হয়। সাহিত্য ব্যতীত সঙ্গীত ও শিল্পকলার যদিও তাহার প্রগাঢ় অনুরোধ ছিল। 1470 খ্রিস্টাব্দে জয়নাল আবেদীন এর মৃত্যু হয়।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ