ভারতের তুর্কো আফগান অভিযান। সুলতান মাহমুদ এবং মুহাম্মদ ঘুরীর ভারত আক্রমণের উদ্দেশ্য এর পার্থক্যটা কী ছিল? কিভাবে দিল্লিতে সুলতানি শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়?

ভারতের তুর্কো আফগান অভিযান। সুলতান মাহমুদ এবং মুহাম্মদ ঘুরীর ভারত আক্রমণের উদ্দেশ্য এর পার্থক্যটা কী ছিল? কিভাবে দিল্লিতে সুলতানি শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়?

প্রশ্ন ঃ ভারতের তুর্কো আফগান অভিযানের কথা লিখ।


উত্তর ঃ একাদশ শতাব্দীর আরম্ভ কাল হইতে ভারতের তুরকো আফগান অভিযান শুরু হয়। এই অভিযান কারীদের তুরকো আফগান বলা হইতো। কারণ অভিযান কারীরা ছিল মধ্য এশিয়ার তুর্কি জাতির শাখা এবং আফগানিস্তানের গজনী। ঘুর ইত্যাদি স্থান হয়েছে এই অভিযান পরিচালিত হইয়াছিল। প্রথম অভিযান করেছিলেন সুলতান মাহমুদ হাজার 997-1030 খ্রিষ্টাব্দ। সুলতান মাহমুদ গজনীর সুলতান ছিলেন। অপুর আক্রমণকারী ছিলেন মোহাম্মদ ঘুরি। তিনি আফগানিস্তানের হিরাট এবং গজনীর মধ্যবর্তী গুড়ের অধিবাসী ছিলেন । হাজার এগারোশো 75 খ্রিস্টাব্দে মহম্মদ ঘুরি মুলতান অধিকার করেন। পরে তিনি পাঞ্জাব জয় করেন। তরাইনের প্রথম যুদ্ধে মোহাম্মদ ঘুরী দিল্লির চৌহান রাজ পৃথ্বীরাজ এর নিকট পরাজিত হন 1191 খ্রিস্টাব্দে। তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধে মোহাম্মদ ঘুরী জয়লাভ করেন 1992 খ্রিস্টাব্দে। পৃথ্বীরাজ বন্দি ও নিহত হন। তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধের দিল্লি এবং উত্তর ভারতের তুরকো আফগান শাসনের ভিত্তি স্থাপন করে।


প্রশ্ন ঃ সুলতান মাহমুদ এবং মুহাম্মদ ঘুরীর ভারত আক্রমণের উদ্দেশ্য এর পার্থক্যটা কী ছিল?


উত্তর ঃ সুলতান মাহমুদের ভারত আক্রমণের উদ্দেশ্য ছিল লুণ্ঠন। তিনি 17 বার ভারত অভিযান করেন। মাহমুদের নিকৃষ্ট অপকীর্তি হইল গুজরাটের সোমনাথ মন্দির লুণ্ঠন। ভারতের ধন-সম্পদ ঐশ্বর্যের মাহমুদ বার বার ভারত আক্রমণ করেছিলেন।

মোহাম্মদ ঘুরী ছিলেন গুড়ের শাসক গিয়াসউদ্দিনের ভাতা। ভারতের রাজ্য স্থাপন ছিল মুহাম্মদ ঘুরীর ভারত আক্রমণের উদ্দেশ্য। তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধে তিনি দিল্লির চৌহান রাজ পৃথিবীর আজকে পরাজিত ও নিহত করিয়া দিল দিও উত্তর ভারতে তুরকো আফগান শাসনের ভিত্তি স্থাপন করেন।


প্রশ্ন ঃ কিভাবে দিল্লিতে সুলতানি শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়?


উত্তর ঃ 1206 খ্রিস্টাব্দে মহম্মদ ঘুরি সিন্ধু নদের তীরে রহস্যময়ভাবে নিহত হন। মৃত্যুর পূর্বে তিনি তাঁর সেনাপতি কুতুবউদ্দিন আইবক কে ভারতে তাহার প্রতিনিধি নিযুক্ত করিয়াছিলেন।

মুহাম্মদ ঘুরীর মৃত্যুর পর কুতুবউদ্দিন স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তিনি দিল্লিতে গজনী ও গুড়ের প্রভাবমুক্ত মুসলিম শাসন পরিবর্তন করেন। ঘুর রাজ্যের অধিপতি গিয়াস উদ্দিন কুতুব উদ্দিন সুলতান উপাধিতে ভূষিত হন 1208 খ্রিস্টাব্দে। শুরু হয় দিল্লির সুলতানি শাসন।


প্রশ্ন- সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযানের বিরুদ্ধে শাহি বংশের প্রতিরোধ আলোচনা করো?


উত্তর ঃ একাদশ শতাব্দীতে পারুল রে শাহী বংশ পেশোয়ারের নিকট রাজত্ব করত। এই বংশের রাজা জয়পাল মামুদ এর নিকট পরাজিত হন। পরাজিত শাহবাজ আত্মমর্যাদা রক্ষার জন্য আগুনে প্রাণ বিসর্জন দেন। জয়পাল এর পুত্র আনন্দপাল হিন্দু রাজাদের ঐক্যবদ্ধ করিয়া মাহমুদের ভারত আক্রমণ প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেন। মাহমুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে হিন্দু রমণীগণ নিজেদের অলংকার দান করিয়া আনন্দ পালকে সাহায্য করেছিলেন। কিন্তু অমিত বিক্রমের যুদ্ধে করিয়াও আনন্দপাল মাহমুদ এর নিকট পরাজিত হন। তৎপর মামুদ কাঁকড়া জেলার নগরকোট দুর্গ আলওয়ার রাজ্যে বাণিজ্যিক কেন্দ্র নারায়নপুর কৌনজ থানেশ্বর মথুরা-বৃন্দাবন প্রভৃতি স্থান গ্রহণ করেন। 1026 খ্রিস্টাব্দে সুলতান মাহমুদ এর নিকট পরাজিত হন।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ