রানা প্রতাপের প্রতিশোধ সংগ্রাম আলোচনা করো? সুফিবাদ কি ভারতের কয়েকজন সুফি সাধকের পরিচয় দাও? ভক্তিবাদ কি? মধ্যযুগের কয়েকজন ভক্তিবাদী সাধকের নাম উল্লেখ করো?

রানা প্রতাপের প্রতিশোধ সংগ্রাম আলোচনা করো? সুফিবাদ কি ভারতের কয়েকজন সুফি সাধকের পরিচয় দাও? ভক্তিবাদ কি? মধ্যযুগের কয়েকজন ভক্তিবাদী সাধকের নাম উল্লেখ করো?

প্রশ্ন ঃ রানা প্রতাপের প্রতিশোধ সংগ্রাম আলোচনা করো?


উত্তর ঃ প্রতাপ সিংহ ছিলেন মোবাইলের রানা উদয় সিংহের বীরপুত্র। উদয় সিংহের মৃত্যুর পর প্রতাপ সিংহ মেবারের রানা হোন। প্রতাপ সিংহের পূর্বপুরুষ সংগ্রাম সিংহ খানুয়ার যুদ্ধে বাবরকে প্রতিরোধ করিয়াছিলেন। মূলক বাহিনী মেবারের রাজধানী চিতর অধিকার করিয়াছিল। চিতর মেবারের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত। চিতরের পতনের পর অবশিষ্ট মেবার স্বাধীন ছিল। রানা প্রতাপ প্রতিজ্ঞা করিয়া আছেন যে যতদিন তিনি চিৎকার করিতে সক্ষম না হইবেন ততদিন তিনি তৃষ্ণায় সায়ন করিবেন এবং স্বর্ণ ও রৌপ্য পাত্রে আহার করবেন না। 1576 খ্রিস্টাব্দে আকবর প্রথার বিরুদ্ধে সৈন্য প্রেরণ করেন। এই যুদ্ধে মুঘল সেনাপতি ছিলেন মানসিংহ।


মানসিংহ আরাবল্লী পাহাড় এর সানুদেশে হলদিঘাটের বিশাল মুঘল বাহিনী সমাবেশ করেন। রানা প্রতাপ সামান্য রাজপুত্র সৈন্যের সাহায্যে মুঘল বাহিনীর সম্মুখীন হন। অমিত বিক্রমের যুদ্ধ করিয়া রাজপুত গান পরাজয় বরণ করে। প্রতাপ আরাবল্লী পাহাড় আশ্রয় গ্রহণ করেন এবং সেখানেই নতুন রাজধানী স্থাপন করেন। অতি দুঃখ কষ্টের মধ্যে জীবন যাপন করলেও রানা প্রতাপ মুঘলের অধীনতা স্বীকার করে নাই। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি ছিলেন মেবারের স্বাধীন রানা।



প্রশ্ন ঃ সুফিবাদ কি ভারতের কয়েকজন সুফি সাধকের পরিচয় দাও?


উত্তর ঃ সুফিবাদ ও ইসলাম ধর্মের মধ্যে উদার সংস্কারমূলক আন্দোলন। সুফি-সাধক গনমানুষ ও মিশরের মধ্যে এবং মানুষের মানুষের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপনের কথা বলিয়াছেন। ভারতের সুফি-সাধক এদের মধ্য নিজামুদ্দিন আলাউদ্দিন মইনুদ্দিন চিশতী সেলিম আমার নাম উল্লেখযোগ্য। নিজামুদ্দিন আলাউদ্দিন আফগানিস্তান হইতে দিল্লিতে আসেন। সুলতান আলাউদ্দিন খলজী তাহার প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। তিনি নিজামুদ্দিন আলাউদ্দিন দরগা একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন।


মইনুদ্দিন চিশতী আজমিরে বাস করিতেন। আজমিরে তাহার সমাধিস্থল আজিও হিন্দু-মুসলমান সকলের নিকট পবিত্র তীর্থস্থান পরিগণিত হয়। সম্রাট আকবর সেলিম চিশতির অনুরাগী ছিলেন। সেলিম চিশতী স্বীকৃতিতে বাস করিতেন। কথিকা আছে সুফি সাধক সেলিম চিশতির অনুগ্রহে পুত্র লাভ করিয়াছিলেন বলিয়া আকবর পুত্রের নাম রাখেন সেলিম যিনি পরবর্তী কালে মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর নামে খ্যাত হন। হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের লোকই সুফি সাধকের ভক্ত ছিল।


প্রশ্ন ঃ মধ্যযুগের কয়েকজন সমাজ সংস্কারের কার্যাবলী লেখ?


উত্তর ঃ মধ্যযুগের হিন্দুদের ধর্মান্তর রোদ করিবার জন্য সমাজ সংস্কারক গণপ্রতিরোধ করেন এবং হিন্দু সমাজের আচরণীয় দ্বিতীয় নিয়ম কঠোর করেন। এই সমাজ সংস্কারক দের মধ্যে মাধব বিশেষণ রঘুনন্দন প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য। মাধব বিজয় নগরের অধিবাসী ছিলেন। তিনি চতুর্দশ শতাব্দী প্রসিদ্ধ সমাজ সংস্কারক। মাধব পরাশর স্মৃতির টিকা দেখেন। তাহার পুস্তকের নাম কাল নির্ণয়। বিশ্বেশ্বর ও ছিলেন মাধবের সমসাময়িক সমাজ সংস্কারক। বিশ্বেশ্বর রচিত স্মৃতিকথার নাম মদন পারিজাত। রঘুনন্দন ছিলেন বাঙালি। তিনি চৈতন্য বেদের সমসাময়িক ছিলেন। স্মৃতিশাস্ত্র তাহার গভীর পাণ্ডিত্য ছিল। রঘুনন্দন হিন্দু সমাজ ও হিন্দু ধর্মের প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন করেন।


প্রশ্ন ঃ ভক্তিবাদ কি? মধ্যযুগের কয়েকজন ভক্তিবাদী সাধকের নাম উল্লেখ করো?


উত্তর ঃ প্রেম ও ভক্তির মাধ্যমে ঈশ্বরলাভ ভক্তিবাদের মূল কথা। ভক্তিবাদী সাধকগণ প্রেম ও ভক্তির দ্বারা মধ্যযুগের রক্ষণশীল ধর্ম আচরণের সংস্কার সাধন করিতে চাহিয়া ছিলেন। মধ্যযুগের ভক্তিবাদী সাধকদের মধ্য রামানন্দ কোভিদ চৈতন্যদেব নানক বলল আচার্য রামদাস প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য। হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে বহু নর-নারী তাহাদের শিষ্ঠত্ব গ্রহণ করিয়াছিলেন।


প্রশ্ন ঃ টীকা লেখ রামানন্দ।


উত্তর ঃ রামানন্দ চতুর্দশ শতাব্দীতে আবির্ভূত হন। তিনি রামের উপাসক ছিলেন। রামানন্দ দাক্ষিণাত্যের রামানুজাচার্যের সম্প্রদায়ভুক্ত স্বামী রাঘব আনন্দের নিকট ভক্তি ধর্মে দীক্ষিত হন। সংস্কৃত ভাষায় অদ্বিতীয় পন্ডিত হইলেও রামানন্দ সকলের উপলব্ধির জন্য সহজ হিন্দি ভাষায় ধর্ম প্রচার করেন। রামানন্দের ধর্মপথ ভক্তিবাদ নামে পরিচিত। তাঁহার প্রধান শিষ্য ছিলেন কবীর অনন্ত ভবানন্দ রুইদাস সুখনরি সুর স্ত্রী এবং পদ্মাবতী। কবীর ছিলেন জেলা রুইদাস বা রবিদাস মুচি নাপিত ছিলেন। রমানন্দ হিন্দু মুসলমান নারী পুরুষ উচ্চ নিচ সকলকেই ধর্মসাধনার অধিকার দিয়েছিলেন। রামানন্দ কতৃক প্রতিষ্ঠিত  নন্দী বা রামাৎ নামে পরিচিতি।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ