বৈদিক যুগের শেষের দিকে বিভিন্ন শ্রেণি ও জাতিবিন্যাস সম্পর্কে আলোচনা করো (Discuss different classes and castes towards the end of vedic era) । নবম শ্রেণি

বৈদিক যুগের শেষের দিকে বিভিন্ন শ্রেণি ও জাতিবিন্যাস (Various classes andraces at the end of the Vedic Age):-


বিভিন্ন প্রকার শ্রেনীবিভাজনঃ-


বৈদিক যুগের শেষের দিকে (আনুমানিক ৬০০ খ্রিঃ পূর্বাব্দে) পেশা বা বৃত্তিকে কেন্দ্র করে ব্রাত্মণ,  ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্রের উৎপত্তি হতে থাকে। কৃষি, পশুপালন, কারিগরি শিল্প ও ব্যাবসা-বাণিজ্যে  যুক্ত ছিল বৈশ্যরা। যজুর্বেদের বাজসনেয়ী সংহিতা’র ত্রিশ অধ্যায়ে বৈদিক যুগের শেষদিকে  বহু কারিগরি শিল্প ও কারিগরের নাম পাওয়া গেছে। 



যেমন—“কর্মার’ বা কামার, জ্যাকার’ বা ধনুকের ছিলা প্রস্তুতকারক, ধনুকার’ বা ধনুক নির্মাতা,  ‘সুরাকার’ বা সুরা প্রস্তুতকারক, ধীচর’, স্বর্ণকার, হস্তিপ’ বা হাতিপালক, অশ্বপ’‘, ‘শৈলুষ’ বা গায়ক, ‘ভিষক’ বা চিকিৎসক, ‘কুসীদিন’ বা সুদখাের প্রমুখ। ব্রাত্মণ ও ক্ষত্রিয়রা উদ্বৃত্ত খাদ্য ও সম্পদের ভােক্তা ছিল। শূদ্ররা সংখ্যায় অল্প বলে তারা অন্য তিন বর্ণের সেবা করত। ‘ঐতরেয় ব্রাত্মণে’ বলা আছে, রাজা নিজের ইচ্ছামতাে শূদ্রদের পীড়ন ও প্রহার করতেন।


   তখন বর্ণপ্রথার বাইরে নিষাদ ও ব্রাত্য শ্রেণি ছিল। নিষাদরা আসলে অনার্য। মহর্ষি মনুর মতে ব্রাত্মণ পিতার ঔরসে বৈশ্য রমণীর গর্ভজাত সন্তান হল ‘বৈদ্য কৌটিল্য তাঁর ‘অর্থশাস্ত্রে’লিখেছেন ব্রাহ্মণ পিতা ও শূদ্রাণীর সন্তানকে ‘নিষাদ’ বলেউশান্‌স সংহিতার মতে ‘কায়স্থের’ উৎপত্তি বৈদ্যদের থেকে। তখনসমাজে উচ্চবর্ণের পুরুষ ও নিম্নবর্ণের নারীর বিবাহকে ‘অনুলােম’ ও তার উলটোটাকে ‘প্রতিলােম বিবাহ’ বলা হত।‘জাতি’বলতে তখন বােঝানাে হত জাতক কোন বংশে জন্ম নিয়েছে।

 মন্তব্যঃ-  


বৌদ্ধযুগে জাতি ও বর্ণপ্রথা আরও উদার ও সমন্বয়ধর্মী রূপ নেয়। ক্ষত্রিয়, বৈশ্য,শেঠ্‌ঠী ও কুসীদজীবী শ্রেণির উত্থান ঘটেছিল। ব্রাত্মণদের সামাজিক মর্যাদা কমে গিয়েছিল। মহাকাব্যের যুগে চতুর্বর্ণ প্রথা থাকলেও ‘বর্ণসংকর’ দেখা গিয়েছিল। মেগাস্থিনিসের ‘ইন্ডিকা’ থেকে বৈদিকযুগের পরবর্তীকালে ভারতীয় সমাজের সাতটি জাতির কথা জানা গেছে। যেমন—দার্শনিক, কৃষক, শিকারি, পশুপালক, কারিগর, সৈনিক ও পরিদর্শক। অর্থশাস্তে অনুলােম ও প্রতিলােম বিবাহকে কেন্দ্র করে সমাজে মিশ্রজাতির উদ্ভবের কথা উল্লেখ আছে।




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ