প্রাণীদের রেচন [EXCRETION IN ANIMALS]:-
অপচিতি বিপাকের ফলে প্রাণীদেহে বিভিন্ন রকম রেচন পদার্থ সৃষ্টি হয়। যেমন—প্রােটিন বিপাকের ফলে সৃষ্টি হয় আমােনিয়া ইউরিয়া, ক্রিয়েটিন, ক্রিয়েটিনিন ইত্যাদি ; নিউক্লিক অ্যাসিড বিপাকের ফলে সৃষ্টি হয় ইউরিক অ্যাসিড : কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট বিপাকের ফলে সৃষ্টি হয় কার্বন ডাইঅক্সাইড ও কিটোন বডি : হিমমাগ্লোবিনের হিম অংশ থেকে উৎপন্ন হয় বিলিরুবিন 1 ও বিলিভারডিন। প্রাণীদের রেচন পদার্থগুলি বিশেষ প্রক্রিয়ায় দেহ থেকে নির্গত হয়ে যায়। মেরুদণ্ডী প্রাণীদের তথা মানবদেহে রেচন পদার্থ নিষ্কাশনে বৃক্ক তথা নেফ্রন বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে।
প্রাণীদের রেচনের বৈশিষ্ট্যঃ-
প্রাণীদের রেচনের উল্লেখযােগ্য বৈশিষ্ট্যগুলি হল----
(i) প্রাণীদের রেচন পদার্থ তুলনামূলকভাবে বেশি জটিল এবং ক্ষতিকারক।
(ii) প্রাণীদেহে প্রােটিন জাতীয় পদার্থের বিপাক বেশি হওয়ায় নাইট্রোজেনঘটিত রেচন পদার্থ বেশি পরিমাণে উৎপন্ন হয়।
(iii) বেশিরভাগ প্রাণীদেহে রেচন অঙ্গ ও তন্ত্র সৃষ্টি হওয়ায় প্রাণীরা রেচন পদার্থগুলিকে দেহ থেকে বার করে দেয়।
(vi) বিশেষ কয়েকটি প্রাণী ছাড়া প্রাণীদেহে রেচন পদার্থ সঞ্চিত থাকে না।
(v) প্রাণীদের রেচন পদার্থ নিজ দেহে পুনরায় ব্যবহৃত হয় না।
মানুষের রেচনতন্ত্র (Excretory System of Man):-
মানুষের রেচনতন্ত্র একজোড়া বৃক্ক, গবিনী, একটি মূত্রাশয় ও মূত্রনালি নিয়ে গঠিত। বৃক্ক দুটি উদর গহ্বরের পৃষ্ঠপ্রাচীরে অবস্থিত, দেখতে শিম বীজের মতাে। বৃক্কের অবতল খাজ থেকে গবিনী নির্গত হয়ে মূত্রাশয়ে উন্মুক্ত থাকে। বৃক্তে উৎপন্ন মূত্র গবিনী দিয়ে বাহিত হয়ে মূত্রাশয়ে সাময়িকভাবে জমা থাকে। মূত্রাশয় থেকে একটি মূত্রনালি নির্গত হয়ে দেহের বাইরে মূত্রছিদ্ররূপে উন্মুক্ত থাকে। মূত্রাশয় থেকে মূত্র প্রয়ােজনকালে মূত্রনালি দিয়ে দেহের বাইরে নির্গত হয়।
0 মন্তব্যসমূহ