প্রয়ােজনীয় পদার্থের পুনঃশােষণের পর নাইট্রোজেনঘটিত রেচন পদার্থের বৃক্কের মাধ্যমে রেচন (Excretion of Nitrogenous Wastes through Kidney after Reabsorption of Essential Elements)
দেহের অব্যবহৃত প্রােটিন ডিঅ্যামাইনেজ (deaminase) উৎসেচকের প্রভাবে অ্যামােনিয়ায়। পরিণত হয় এই অ্যামােনিয়া যকৃতে আরজিনেজ (arginase) উৎসেচকের সাহায্যে অরনিথিন চক্রের (ornithin cycle) মাধ্যমে ইউরিয়ায় পরিণত হয়। এই ইউরিয়া ও অন্যান্য নাইট্রোজেনঘটিত দষিত পদার্থসহ রক্ত বৃক্কীয় ধমনির মাধ্যমে বৃক্কে পৌঁছােয় এবং অন্তর্মুখী ধমনিকা দিয়ে নেফ্রনের গ্লোমেরুলাসে আসে। অন্তর্মুখী ধমনিকার তুলনায় বহির্মুখী ধমনিকার ব্যাস সংকীর্ণ হওয়ায় গ্লোমেরুলাসে যে উচ্চ চাপের সৃষ্টি হয়, তারই ফলে রক্তের জলীয় অংশ (প্রােটিন ছাড়া), রেচন পদার্থ গ্লোমেরুলাসের জালকের পাতলা প্রাচীর ভেদ করে পরিত (filter) হয়ে ব্যোওম্যানের ক্যাপসুলে প্রবেশ করে সেখান থেকে পরিত তরলের প্রয়ােজনীয় উপাদানগুলি, যেমন—জল, গ্লুকোজ, অ্যামাইনাে অ্যাসিড, সােডিয়াম ও পটাশিয়াম আয়ন, বৃক্কীয় নালিকায় পুনঃশােষিত (reabsorption) হয়) পরিসুত তরল মূত্ররূপে সংগ্রাহী নালিতে আসে। উল্লেখ্য, বৃিক্কীয় নালিকায় কিছু রেচন পদার্থ (অ্যামােনিয়া, ক্রিয়েটিনিন, হিপপিউরিক অ্যাসিড ইত্যাদি) ক্ষরিত হয়ে মূত্রের মধ্যে অবস্থান করে সংগ্রাহী নালিকা থেকে মূত্র বেলিনির নালি হয়ে বৃক্কের সাইনাসে আসে এবং গবিনী দিয়ে মূত্রাশয়ে এসে সাময়িকভাবে সুতি হয়।
* মূত্র (urine) হল মেরুদণ্ডী প্রাণীদের নাইট্রোজেনঘটিত জলীয় রেচন পদার্থ । পরিস্তুতকরণের পর পুনশশোষিত ও ক্ষরিত পদার্থসহ তরলকেই মুত্র বলে। মুত্রের মাধ্যমে বিপাকজাত নাইট্রোজেন ঘটিত দূষিত পদার্থগুলি দেহের বাইরে নির্গত হয় । মূত্রের প্রধান কয়েকটি জৈব বস্তু হল—ইউরিয়া, অ্যামােনিয়া, ইউরিক অ্যাসিড, ক্রিয়েটিন প্রধান কয়েকটি অজৈব বস্তু হল NaCl, KCI, Mg, Ca, Fe, SO4, PO4, ইত্যাদি।
* পশ্চাৎ পিটুইটারি থেকে নিঃসত অ্যান্টিডাইইউরেটিক হরমােন বা ADH বৃক্কীয় নালিকার দূরসংবর্ত অংশে জলের পুনঃশশাষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে । এই হরমােনের অভাবে বৃক্কীয় নালির পুনঃশােষণ ক্ষমতা হ্রাস পায়, ফলে মূত্রের পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে বহুমত্র বা ডায়াবেটিস ইনসিপিডাস রােগ হয়।
* একজন প্রাপ্তবয়স্ক লােক প্রত্যহ (24 ঘন্টায়) দেড় থেকে দু-লিটার মূত্র ত্যাগ করে।
0 মন্তব্যসমূহ